সবুজ সিলেট ডেস্ক
শিক্ষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিতে সরকারের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজের অনুরোধ জানিয়েছে দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যলগুলো।
অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিজ অব বাংলাদেশ (এপিইউবি)-এর পক্ষ থেকে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এবং শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে প্রণোদনার দাবি জানানো হয়েছে।
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন পর্যন্ত কর্মীদের মার্চের বেতনও পরিশোধ করেনি।
এপিইউবি’র চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন জানান, প্রণোদনা সংক্রান্ত একটি চিঠি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি’র সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পর কবির হোসেন বলেন, অনলাইনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া ও ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়াসহ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক সহায়তা দরকার। এছাড়া শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জরুরি হয়ে পড়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়ের মূল দুটি খাত হলো সেমিস্টার ফি ও অ্যাডমিশন ফি। তবে করোনাভাইরাস সংকটের কারণে খাত দুটি থেকে আয় বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোরই তাদের কর্মীদের বেতন দিতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
তবে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইন ক্লাস ও অন্য শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এপিইউবি চেয়ারম্যান বলেন, “এ কারণেই আমরা অন্য সেক্টরগুলোর মতো শর্তাধীন বা শর্তমুক্ত প্রণোদনা প্যাকেজ চেয়েছি। যদিও আমরা প্রণোদনার অর্থের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বলিনি, তারপরও শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে মৌখিক ইঙ্গিত দিয়েছি।”
মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এবং ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করে জানাবে বলে শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, জানান কবির হোসেন। তিনি বলেন, সরকার প্রণোদনা দিলে সেই অর্থ তিন থেকে চার বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।
সরকার প্রণোদনা না দিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী যদি ২৫ থেকে ৩০ হাজার কর্মচারীর বেতন দিতে হয় তাহলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে বলে জানান কবির হোসেন।
এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ জানান, তারা এরই মধ্যে এপিইউবি’র দেওয়া চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।
এর আগে সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইন ক্লাস, ক্লাসের বিষয় ও শিক্ষার্থীদের শতকরা অংশগ্রহণ সম্পর্কে ধারণা নিতে চিঠি দেয় ইউজিসি। ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ চৌধুরী বলেন, ৫৭টি প্রাইভেট ও ১৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চিঠির জবাব দিয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়ের জবাব সন্তোষজনক। সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ক্লাস নিচ্ছে। সেগুলোতে ৫০ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ বৈঠকে ছয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইন ক্লাসে সব শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছে। এছাড়া বৈঠকে দিপু মনি সব কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।