আইসিসি’র চোখে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ জয়

11

স্পোর্টস ডেস্ক
১৯৭৭ সালে আইসিসি’র সদস্যপদ লাভ করার পর পূর্ণ সদস্যপদ পেতে অপেক্ষা করতে হয় ২৩ বছর। সব জল্পনা কল্পনা শেষ করে ২০০০ সালে আইসিসি’র পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। এরপর আসতে আসতে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের ছাপ রাখা শুরু করে টিম টাইগার। বর্তমানে বিশ্বের সেরা দলগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। আর ওয়ানডে তো সেরাদের কাতারেই বাংলাদেশ দল। টাইগারদের সম্মানের চোখে কেবল প্রতিপক্ষই দেখে না সেই সঙ্গে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ প্রশাসনও বাংলাদেশকে পরাশক্তি মনে করে।

সম্প্রতি ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি’র তাদের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা পাঁচ জয়ের মুহূর্ত প্রকাশ করেছে। যেখানে ক্যাপশনে ‘বাংলাদেশের সেরা পাঁচ স্মরণীয় মুহূর্ত’ লিখে সেরা পাঁচটি জয়ের ভিডিও পোস্ট করেছে আইসিসি।

আইসিসি’র চোখে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ জয়ের মুহূর্ত দেখে নেওয়া যাক-
১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়:
আইসিসি’র পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করার ঠিক আগের বছর বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। আর আইসিসি’র চোখে বাংলাদেশের সেরা পাঁচ ওয়ানডে ম্যাচ জয়ের একটি পাকিস্তানের বিপক্ষের এই ম্যাচটি। সেবার পাকিস্তানকে ৬২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ, আর সেটি ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে টাইগারদের প্রথম জয়। ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনের সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২২২ রান করে টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করেতে নেমে ৪৪.৩ ওভারে ১৬১ অলআউট হয় ঐ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টরা। ৬২ রানের সহজ জয় পায় আমিনুল ইসলামের বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা জয়ের মুহূর্ত বলে মনে করছে আইসিসি।

২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জয়:
আইসিসির চোখে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জয়ের মুহূর্ত ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাওয়া ঐতিহাসিক জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পোর্ট অব স্পেনে এই জয়ে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বকে জানান দিয়েছিল নতুন পরাশক্তির আগমনী বার্তা। সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফি, সাকিব, রাজ্জাকদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৯০ রানেই গুটিয়ে যায় কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান গাঙ্গুলী, শেবাগ, টেন্ডুলকার, দ্রাবিড়দের নিয়ে গড়া ভারতীয় ব্যাটিং লাইন আপ। ১৯১ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের ঝড়ো সুচনার পর অর্ধশতক আর এরপর মুশফিক ও সাকিবের অর্ধশতকে ভর করে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় হাবিবুল বাশারের দল।

২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়:
আইসিসি’র সেরা মুহূর্তের তিন নম্বরে রয়েছে ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষের জয়। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে আগে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের শতকে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭৫ রান তোলে মাশরাফি বিন মুর্ত্তজার দল। রিয়াদ ছাড়াও এই ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে আসে ৮৯ রান। ২৭৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে রুবেল হোসেনের দুর্দান্ত ডেথ ওভারের বোলিংয়ে ২৬০ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশদের ইনিংস। আর তাতেই ১৫ রানের জয় পায় টাইগাররা। এই জয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ থেকে ইংলিশদের বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে বাংলাদেশ দল।

২০১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়:
তালিকার চার নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষের জয়। দ্য ওভালে আগে ব্যাট করে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতকে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান তোলে টাইগররা। সে সময় এটিই ছিল টাইগারদের দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৮ উইকেটে ৩০৯ রান করে প্রোটিয়ারা। ২১ রানের জয় পায় টিম টাইগার্স।

২০১১ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়:
২০১১ সালে ভারত এবং শ্রীলংকার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ। সেবার ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ দল। এই জয়টিকেই আইসিসি বাংলাদেশের ৫ম সেরা মুহূর্ত বলে আখ্যা দিয়েছে। প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ দশমিক ৪ ওভারে ইংল্যান্ডকে ২২৫ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। এরপর ব্যাট করতে নেমে ১৬৯ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের শঙ্কায় পড়ে যায় স্বাগতিকরা। তবে শেষদিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং শফিউল ইসলাম দলের হাল ধরেন। দুই জনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত এক ওভার হাতে রেখেই ২ উইকেটের জয় তুলে নেয় সাকিব আল হাসানের দল।