ওসমানীনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে যুবক খুন, আহত ১৫

132

 

ওসমানীনগর প্রতিনিধি

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শিপন মিয়া (২৪) নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। বুধবার ইফতারের সময় উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির ঈশাগ্রাই গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

নিহত শিপন আহমদ ঈশ্রাগ্রাই গ্রামের আশিক মিয়া ছেলে। আহতরা হলেন, ঈশাগ্রাই গ্রমের গ্রামের আশিক আলী, আশিক আলীর ছেলে, রিপন আহমদ, আব্দুল হক, আব্দুস সালাম, আনহার মিয়া, নজির মিয়া ও নজির মিয়ার ছোট এক শিশুসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৭ জন। আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আশিক মিয়া ও আব্দুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঈশাগ্রাই গ্রামের জয়নুল হক ধন মিয়ার সাথে একই গ্রামের নিহত শিপনের পিতা আশিক আলীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। কিছুদিন পূর্বে ধন মেম্বার আশিক মিয়া বাড়ির চালাচলের রাস্তার সামনের ভূমি নিজের দাবী করে দেয়াল নির্মাণ করে আশিক আলীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেন। এছাড়াও ধন মেম্বারের পরিবারের পক্ষ থেকে দেয়া গ্রামের জামে মসজিদ নিয়েও আশিক আলী গংদের সাথে ধন মিয়ার পক্ষের লোকজনদের বিরোধ দীর্ঘদিন থেকে। আশিক আলীর চলাচলের রাস্তায় ধন মেম্বারের দেয়াল নির্মাণ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিশিষ্ট সালিশ ব্যক্তিত্বরা একাধিকবার বিচার সালিস করেও বিষয়টি মীমাংসা করতে পারেননি। সম্প্রতি আশিক আলী গংরা গ্রামের মসজিদের পুকুরে মাছ মারাতে গেলেও ধন মিয়ার পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়, বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়।

বুধবার বিকাল থেকে ইউপি সদস্য ধন মিয়ার পক্ষের এলাইচ মিয়ার সাথে আশিক মিয়ার পক্ষের ছোরাব মিয়ার মধ্যে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে ইফতারের ৮-১০ মিনিটি পূর্বে জয়নুল হক ধন মিয়ার নেতৃত্বে এক পক্ষ এবং আশিক আলীর নেতৃত্বে অপর পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এ সময় ধন মিয়ার পক্ষের লোকজন শিপন আহমদকে দেশী অস্ত্র (সুলফি) দিয়ে আঘাত করলে শিপনের বুকে বিদ্ধ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে শিপনসহ উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় শিপন মিয়া সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় হাসপাতালে শিপন মারা যায়।

নিহত শিপনের চাচা রানা মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য জয়নুলহক ধন মিয়ার সাথে আমার ভাই আশিক মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। আমার ভাইয়ের রাস্তা ধন মিয়া পাকা দেয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। বুধবার এলাইছ মিয়ার সাথে ছোরাব মিয়ার ঝগড়াকে কেন্দ্র করে আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে এলাইচ। এ সময় ধন মিয়া এলাইচের পক্ষ নিয়ে আমার ভাই ভাতিজাদের উপর হামলা চালায় এবং ধন মিয়া নিজে ধারালো সুলফি দিয়ে আমার ভাতিজাকে আঘাত করে হত্যা করে। আমি বাধা দিয়েও ধন মিয়াকে আটকাতে পারিনি। আমি আমার ভাতিজার হত্যার বিচার চাই।

ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদ মোবারক দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শিপন নামের এক যুবক নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন পলাতক রয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।