সবুজ সিলেট ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংক বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (০৮ মে) সকালে উপজেলার মোল্লাবাড়ি দিঘীরপাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বাও রয়েছেন। আহত হয়েছেন পাঁচজন। এদের মধ্যে দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানান, সকাল ৬টার দিকে দিঘীরপাড়ের উইলসন কবরস্থান রোড এর ৪৬১/১ হোল্ডিংয়ের রফিকুল ইসলাম হাসানের পাঁচ তলা ভবনের নিচতলায় সেপটিক ট্যাংক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এ সময় পাশের একটি চারতলা ভবন ও টিনসেড বাড়ির কিছু অংশ ধসে পড়ে। বিস্ফোরণের পর পাঁচতলা ভবনটির নিচতলার ভাড়াটে খোরশেদ আলমের ঘুমন্ত দুই শিশু মাকরুন (১৩) ও জিসান (৮) খাট থেকে ছিটকে বিস্ফোরিত ট্যাংকে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন পাশের ফ্লাটের ভাড়াটে পরিবারের তিন জন। তাদের ঘরের সব আসবাবপত্র ভেঙে চুরে যায়।
এ বিস্ফোরণে ঘটনায় ভবনটির বিপরীত দিকের টিনসেড বাড়ির কিছু অংশ ধসে পড়লে লাবনী বেগম নামে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীও নিহত হন। আহত হন তার মেয়েসহ আরও দুই ভাই বোন। বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ও কম্পনে আতঙ্ক সৃষ্টি হলে আশপাশের বিভিন্ন বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থলে এসে জড়ো হন। খবর পেয়ে বন্দর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে নিহত ও আহতদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেন। তবে দুর্ঘটনার পর বাড়ির মালিক কাউকে সহযোগিতা না করে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ভাড়াটিয়া পরিবার।
আহতদের মধ্যে নিহত অন্তঃসত্ত্বা নারী লাবনী বেগমের মেয়ে নাবিলা, দুই ভাইবোন রেকমত শেখ, রুবেল এবং অপর পরিবারের তামান্না ও শহীদকে ঢাকা মেডিকেল এবং স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ও স্বজনরা।
এদিকে দুর্ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকাবাসীসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সাথে কথা বলেন। পরে বাড়িটির সব বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আহতদের উদ্ধার করে দুজনকে ঢাকা মেডিকেলে ও অন্যদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বন্দর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার জিন্নাত আলী খান জানান, বাড়িটি নির্মাণ কাজে ত্রুটি থাকার কারণে এ বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।