কানাইঘাট প্রতিনিধি
কানাইঘাটে প্রথম করোনা আক্রান্ত হবিগঞ্জ ফেরত ধান কাটা শ্রমিক ফারুক আহমদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। পাশাপাশি ফারুক আহমদ ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বারিউল করিম খান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. শেখ শরফুদ্দিন নাহিদ ও কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম এবং বাণীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ করোনা আক্রান্ত ফারুক আহমদের লামারতালুক গ্রামের বাড়িতে যান।
তার বাড়িতে যাতে করে কেউ প্রবেশ না করতে পারে এজন্য পুরো বাড়ি লকডাউন করেছে থানা পুলিশ। তবে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফারুক আহমদের রিপোর্ট পজেটিভ আসার পরই স্থানীয় এলাকাবাসী তার বাড়িসহ আশপাশের কিছু এলাকা লকডাউন করেছেন।
ডাক্তাররা করোনা আক্রান্ত ফারুক আহমদ সহ তার স্ত্রী ও ৬ সন্তানের নমুনা সংগ্রহ করেন এবং ফারুক আহমদকে তার বসত ঘরের একটি কক্ষে থাকার জন্য আহ্বান জানান। যাতে করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত যেন ঘর থেকে বের না হয় এজন্য ফারুক আহমদের স্বজনদের নির্দেশনা দেন নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান। এ নিয়ে আতংকিত না হয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
এসময় থানার ওসি করোনা আক্রান্ত ফারুক আহমদের স্পর্শে যারা এসেছেন তাদের সবাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিয়ে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার আহ্বান জানান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. শেখ শরফুদ্দিন নাহিদ জানান, কোন ধরনের উপসর্গ ছাড়াই ফারুক আহমদের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। এখন পর্যন্ত করেনার যেসব উপসর্গ থাকে ফারুক আহমদের শরীরে সেই উপসর্গ দেখা দেয়নি। তিনি সুস্থ আছেন। তারপরও পুনরায় তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তার প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র প্রদান ও চিকিৎসা চলছে। তিনি যেন নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন আমরা সেদিকে কঠোর নজর রাখব।
ডা. শরফুদ্দিন নাহিদ আরো জানান, ‘করোনায় পজেটিভ রিপোর্ট আসা ফারুক আহমদের সাথে যারা হবিগঞ্জ থেকে ধান কেটে গত ১ মে বাড়ি ফিরেছিলেন তাদের মধ্যে আমরা ৯জনের নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ফারুক আহমদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। অন্যান্যদের রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আমরা পাই নি।
এদিকে আজ শনিবার হাসপাতালে করোনা সন্দেহে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান ডা. শেখ শরফুদ্দিন নাহিদ। এছাড়া করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে কানাইঘাটে ৮৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫০ জনের মতো রিপোর্ট এসেছে, ফারুক আহমদ বাদে সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে ফারুক আহমদের নমুনা সংগ্রহ হাসপাতালে করা হয় এবং শুক্রবার রাতে তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে।