মিলাদ জয়নুল, বিয়ানীবাজার ::
বিয়ানীবাজারের পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভিপি সম্পত্তি জাল কাগজপত্র সৃজন করে ফের বন্দোবস্থ নেয়ার পায়তারা করছে একটি ভূমিগ্রাসী চক্র। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন এবং সহকারী কমিশণার (ভূমি) কার্যালয়ের নজরে আনা হলে বন্দোবস্থ প্রক্রিয়াটি আটকে দেয় প্রশাসন।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ফতেহপুর মৌজার (জেএল নং ১০৭, দাগ নং ৬৩৪) মূল্যবান কিছু জমি ১৯৬৭ইং সনে জনৈক তাহির আলী আলীর নামে বন্দোবস্থ (ভিপি-২৯৮/ ৬৬-৬৭ ও ভিপি-১৮/ ৬৮-৬৯) প্রদান করে জেলা প্রশাসন। তখন থেকে ওই জমির রক্ষণাবেক্ষনসহ নিয়মিত খাজনা প্রদান করতে থাকেন তাহির আলী। কয়েকবছর পর একটি মহল ওই সরকারি জমির মালিকানা দাবী করে আদালতে মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ শুনানী শেষে দাখিল করা কাগজপত্র জাল উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিকে তিরস্কার করেন আদালত।
এদিকে আদালতে মামলা চলমান থাকায় স্থানীয় ভূমি অফিস তাহির আলীর পক্ষে খাজনা আদায় বন্ধ করে দেয়। এ সুযোগে জনৈক সুনাম উদ্দিন ও ফয়সল আহমদ নামীয় ব্যক্তিদ্বয় অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে ওই জমির একসনা বন্দোবস্থ নেন। এতে সহকারী কমিশণার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার বাদশাহ মিয়া, সদর তফশিল অফিসের তফশিলদারসহ আরো একাধিক অসৎ কর্মচারী সহায়তা করেন বলে অভিযোগ আছে।
এসব বিষয় উল্লেখ করে তাহির আলীর ছেলে ওমর হোসেন সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের পক্ষে খাজনা আদায়ের আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে বিয়ানীবাজারের সহকারী কমিশণার (ভূমি) কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসকের সেই নির্দেশের কয়েকমাস পেরিয়ে গেলেও কোন উদ্যোগে নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন।
অপরদিকে নিজের পিতার নামে বন্দোবস্থ নেয়া জমি জাল-জালিয়াতি ও ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মচারীর কারণে বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওমর হোসেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন দপ্তর এবং উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে ভূমিগ্রাসী ওই চক্র। তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করছে। এসব বিষয় উল্লেখ করে বিয়ানীবাজার থানায় একাধিক সাধারণ ডায়রী করেছি। তবে এসব বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি অপরপক্ষের ফয়সল আহমদ।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারী কমিশণার (ভূমি) খুশনুর রুবাইয়াত বলেন, বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। সরেজমিন তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মাহবুব জানান, বিষয়টি আমার নজরে আছে। আইন ও বিধি অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেয়া হবে।