ডাক্তারি না পড়েই মেডিকেল অফিসার, করতেন অপারেশন

25

সবুজ সিলেট ডেস্ক::
মাধ্যমিকে মানবিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষা নিয়ে পড়া আমির হোসেন ভূঁইয়া (২২) চিকিৎসকের ভুয়া সনদপত্র তৈরি করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রসূতিদের অপারেশন করতেন। ব্যবস্থাপত্রও লিখতেন। একইভাবে উপজেলা শহরের মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাফা কামাল (৩৬) চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগী দেখতেন এবং অপারেশন করতেন। তবে তিনি মাধ্যমিকের গণ্ডিও পেরোতে পারেননি।

দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসা এই দুই ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছেন বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদস্যরা। শুক্রবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নগরীর রূপাতলী র‌্যাব-৮ এর সদর দফতর থেকে তাদের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

র‌্যাব-৮ এর এএসপি মো. আদনান জানান, মঠবাড়িয়া শহরের আব্দুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) আমির হোসেন ভূঁইয়াকে (২২) এবং মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এর মালিক মোস্তফা কামালকে আটক করা হয়।

তিনি আরও জানান, মাধ্যমিকে মানবিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষায় পড়া আমির হোসেন ভুয়া চিকিৎসকের সনদপত্র দেখিয়ে হাজী আব্দুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর থেকে তিনি গাইনোকোলজিস্ট হিসেবে রোগী দেখার পাশাপাশি সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে আসছিলেন। এছাড়া শহরের আরও বেশ কিছু প্রাইভেট ক্লিনিকে অন কল ডাক্তার হিসেবে অপারেশন করতেন।

এএসপি মো. আদনান জানান, আমির হোসেন ভূঁইয়ার দেয়া তথ্যমতে মঠবাড়িয়ার মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচলনা করা হয়। ওই ক্লিনিকের মালিক মোস্তাফা কামাল জিজ্ঞাসাবাদে জানান- আমির হোসেন ভূঁইয়ার ডাক্তারি সনদ না থাকার বিষয়টি তিনি জানতেন। এরপরও আমির হোসেন ভূঁইয়াকে তার ক্লিনিকে নিয়ে এসে রোগীদের অপারেশন করাতেন। তাছাড়া মোস্তাফা কামাল নিজেও আপারেশন করতেন। যদিও তিনি মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। পরে মহিমা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপারেশন থিয়েটারে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন ওষুধ জব্দ করা হয়।

পরে ওই দুইজনকে ভ্রামামাণ আদালতে সোপর্দ করা হয়। ভ্রামামান আদালতের বিচারক পিরোজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী আটক আমির হোসেন ভূঁইয়াকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং হাজী আব্দুর রাজ্জাক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি মহিমা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাফা কামালকে তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া সৌদি প্রবাসী হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেখানে কল ডাক্তার হিসেবে আমির হোসেন ভূঁইয়া রোগীদের অপারেশন করতেন, ব্যবস্থাপত্র দিতেন।