অনলাইন ডেস্ক: সেনাবাহিনীতে কর্মরত মেজর সেজে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের পর আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) রাজশাহী মহানগরীর ঢাকা বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে এই প্রতারককে গ্রেফতার করে রাজশাহী মেট্রোপলিটনের (আরএমপি) মতিহার থানা পুলিশ।
গ্রেফতার চিন্তাহরন বিশ্বাস (৩৯) টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানার থলপাড়ার মহেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। মুসলিম পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে নিয়মিতই এরকম প্রতারণা করতেন তিনি। তার বিরুদ্ধে একই অপরাধে সিলেট মেট্রোপলিটনের শাহপরান থানায় আরও একটি মামলা রয়েছে।
আরএমপির ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চিন্তাহরন হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়েও মো. রোহান সিকদার নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলেছেন। পাঁচ মাস আগে এই ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে তিনি রাবির এক ছাত্রীর (মুসলিম) সঙ্গে পরিচিত হন। তখন তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দেন এবং সেনাবাহিনীর অধীনে ক্যালিফোর্নিয়াতে পিএইচডি করছে বলে জানান। এছাড়াও বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, বড় ভাই পুলিশ সুপার, ভাবি মেডিকেলে পড়াশোনা করেন এবং মা-বোন ডাক্তার এসকল কথা বলে চিন্তাহরন ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রলোভন দেন।
একপর্যায়ে সেই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলেন তিনি। সেই সুবাদে চিন্তাহরন ভুক্তভোগী সেই ছাত্রীর দুলাভাইকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চাকরির প্রলোভন দেন। এজন্য তিনি ওই পরিবারের কাছ থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দুই লাখ টাকা নেন। এদিকে চাকরি না দিয়ে আরও তিন লাখ টাকা লাগবে বলে চাপ দিতে থাকেন। চিন্তাহরনের এমন আচরণে ওই ছাত্রীসহ তার পরিবারের সন্দেহ হলে তারা মতিহার থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।
ওই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আরএমপি’র মতিহার বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মধুসুদন রায়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মতিহার থানা পুলিশের একটি টিম বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। পরবর্তীতে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. মোবারক পারভেজের দিকনির্দেশনায় এসআই পলাশ আলী ও তার টিম ফেসবুকে সেনাবাহিনীর মেজর হিসেবে পরিচয়দানকারী রোহানের প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর কৌশলে চিন্তাহরনকে টাঙ্গাইল থেকে রাজশাহীতে ডেকে এনে আজ ১৬ মার্চ বিকেল পৌনে ৬টায় গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার আসামি চিন্তাহরনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে কখনো নিজেকে সেনাবাহিনীর কিংবা পুলিশের ঊর্ধ্বতন অফিসার বা আত্মীয়র পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে। গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আরএমপি’র মতিহার থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।