শিবালয়ে ৩ ইউপি সদস্যকে পেটালেন চেয়ারম্যান

19

অনলাইন ডেস্ক: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তার পরিষদের তিন ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে আহত করাসহ তাদের মোটরসাইকেল নদীতে ফেলে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে।

আহত তিন ইউপি সদস্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত ওই ইউপি সদস্যদের দাবি, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যানের চাচার পক্ষে না থেকে অন্য প্রার্থীর পক্ষে থাকায় তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে।

আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য জয়নাল আবেদীন জানান, রোববার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রহিম খানের সঙ্গে দেখা করে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে আসছিলাম। রাত ১২টার দিকে ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য জমাত আলী ও ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আয়নাল মোল্লাকে তাদের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে আমাদের দুটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে চেয়ারম্যান মোনায়েম মুনতাকিম রহমান খান অনিক ও তাদের লোকজন।

তখন চেয়ারম্যান জানতে চান কোথায় যাওয়া হয়েছিল? রহিম খানের কাছে যাওয়ার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান নিজে ও তার লোকজন আমাদের উপর ধারালো অস্ত্র, হাতুড়ি ও কাঠের বাটাম দিয়ে হামলা করেন। আমার মাথায় ও পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করেন। ইউপি সদস্য দেলোয়ারকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেন এবং ইউপি সদস্য সোহেল রানাকে কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। আমাদের কাছে থাকা দুটি মোটরসাইকেল পদ্মা নদীতে ফেলে দেন তারা।

ইউপি সদস্য সোহেল রানা বলেন, আমাদের ওপর হামলা হয়েছে মূলত চেয়ারম্যানের চাচা বর্তমান শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান খান জানু এবারও নির্বাচন করবেন। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খানও নির্বাচন করবেন। আমরা গরিব মানুষের জন্য রহিম খানের কাছ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা আনার কারণে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। হামলার পর ডাকচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আমাদের তিনজনকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সোমবার দুপুরে শিবালয় থানা পুলিশ মোবাইলে তাদের কাছ থেকে হামলার ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। হাসপাতালে থাকার কারণে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে পারিনি।

আরুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোনায়েম মুনতাকিম রহমান খান অনিক বলেন, তার পরিষদের তিনজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে কারো মারামারি হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। সোমবার সারাদিন ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যস্ত থাকায় তাদের বিষয়ে আর খোঁজখবর নেয়া হয়নি। হামলার ঘটনায় আপনি জড়িত এমন প্রশ্নের জবাবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, কাল রাতে কোথায় ঘটনা ঘটেছে আমি এর কিছুই জানি না। জড়িত থাকার প্রশ্নেই ওঠে না।

শিবালয় থানার ওসি আব্দুর রউফ সরকার বলেন, ইউপি সদস্যদের মারধরের ঘটনা লোকজনের মাধ্যমে শুনেছি। সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলের পাশে পদ্মানদীর পাড় থেকে পুলিশ দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। এ ব্যাপারে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।