সিলেটে এক সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের ‘১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি’

3

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনে এক সপ্তাহে সিলেটে বিভিন্ন খাতে অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য ব্যবসায়ী নেতাদের। তাদের মতে, পর্যটন খাতেই অন্তত পাঁচশ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, সিলেটে বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে কৃষি ও ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর রেশ কেটে ওঠার আগেই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেটসহ গোটা দেশই ক্ষতির মুখে পড়ে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষের হাতে টাকা নেই, বাকি কিনে খেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেট জেলায় অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে সিলেটের শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। আন্দোলন চলাকালে পথের মধ্যে ট্রাকেই অন্তত ৮-১০ কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হয়েছে।

তাহমিন আরও বলেন, মার্কেট বন্ধ ছিল। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও দোকান বন্ধ রাখেন। কর্মচারীদের বেতন তো ঠিকই দিতে হবে। টাকা কোথায় পাবে? প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। আর ইন্টারনেট বন্ধ, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেনদেন বন্ধ হয়ে পড়ায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ব্যবসায় অন্তত ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন মনে করেন এই ব্যবসায়ী নেতা। তার মতে, এখন প্রয়োজন সবকিছু সহজ করে দেওয়া, লাইসেন্স মওকুফ করা। বিশেষ করে এক বছরের জন্য ব্যবসায়ীদের ভ্যাট, ট্যাক্স ও ঋণের সুদ মওকুফ করে দেওয়া প্রয়োজন।

সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান রিপন বলেন, ব্যবসায়ীদের ক্ষতি শুরু মে মাস থেকে, বৃষ্টি আর বন্যা দিয়ে। কোটা আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউন থেকে দোকানপাট বন্ধ। দুই দিন ধরে দোকানপাট খোলা হলেও ক্রেতা নেই। কারফিউ শিথিল করা হলেও মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি কাজ করছে। কর্মচারীদের চালানো দায় হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এমনিতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত, অথচ এ পরিস্থিতিতেও ভ্যাট অফিস থেকে ফোনে ব্যবসায়ীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে অন্তত এই মাসে কাউকে বিরক্ত করতে না করেছি। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে ক্ষতি হয়েছে বেশি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের।

রিপন আরও বলেন, নগরে সাড়ে সাত হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কর্মচারীর বেতন, নানা বিলের পরও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আছেন ঋণের চাপে। তাদের মাথার ওপর কিস্তির খড়্গ। আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের ৮-৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ব্যবসায়ী এ নেতা বলেন, যাদের দেড়-দুই লাখ টাকার পণ্য প্রতিদিন বিক্রি হতো, তারা এক সপ্তাহে ১০ হাজার টাকার পণ্যও বিক্রি করতে পারছেন না।