কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার হটানোর এক দফা কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জনতার অভ্যূত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর থেকে কাজে নেই পুলিশ বাহিনী। তাই মঙ্গলবার থেকে শৃঙ্খলা ফেরাতে ফের মাঠে নামে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় গাড়ি চলাচলে বিশৃঙ্খলা রোধ করতে মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকগণ। শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়ক ঘুরে শিক্ষার্থীদের এমন তৎপরতা দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে তাদের দক্ষতায় সারা দেশের মানুষই বিস্মিত। উপজেলার ভানুগাছ বাজার চৌমুহনী, শমশেরনগর বাজার চৌমুহনী ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গার আশেপাশেও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে শিক্ষার্থীরা।
ভানুগাছ চৌমুহনীতে দেখা যায় সচেতনামূলক পদক্ষেপের কাজ করছে কমলগঞ্জ সরকারি গণ মহাবিদ্যালয়. আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজ ও মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং শমশেরনগর বাজার চৌমুহনীতে বিএএফ শাহীন কলেজ, সুজা মেমোরিয়াল কলেজ ও এএটিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসময় বাজারের বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা পরিষ্কার করতে দেখা যায় তাদের।
পাশাপাশি রাস্তায় দাড়িয়ে তারা গাড়ির লাইসেন্স, হেমলেটে আছে কি না চেক করছে। যদি কাগজ ও হেমলেট না থাকে তাদের ১০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। চালকদের মধ্যে চলতো নিয়ম ভাঙার প্রতিযোগিতা। ট্রাফিক পুলিশের নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়েই এতোদিন চলেছেন চালকরা। কিন্তু এখন কোন মামলা ও জরিমান ছাড়াই সড়কে ফিরে এসেছে শৃঙ্খলা। সড়কে সবাই মানছেন ট্রাফিক সিগন্যাল। যা বাস্তবায়ন করছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শমশেরনগর কাঁচা বাজারে নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করেন।
গত কয়েকদিনে পুলিশ সসদস্যরা কর্ম বিরতিতে থাকায় দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের ভূমিকার কারণেই সড়কে শৃঙ্খলা বজায় আছে। জনসাধারণের দাবি, এমন সুশৃঙ্খলভাবে সড়কে গাড়ি চলতে খুব কমই দেখেছেন তারা।
গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীদের কেউ সড়কের সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করছে। গাড়িচালকরা সঠিক লেন মেনে চলতে বাধ্য হচ্ছে। সিগন্যাল না মানলে তাদের বাধাও দেয়া হচ্ছে। ফলে ট্রাফিক পুলিশ বিহীন রাস্তায় গাড়ি চলাচলে ভোগান্তি কমেছে। সড়কে বড় যানজটও দেখা যাচ্ছে না।
কমলগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্কাউট সদস্য স্বর্ণা দত্ত ও রাতুল ইসলাম জানান, ‘আমরা স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা নিয়ম না মানা চালকদের শাস্তিও দিচ্ছেন। হেলমেটবিহীন মোটর সাইকেল চালকদের সতর্ক করা হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তি হিসেবে ৫-১০ মিনিট রাস্তায় অপেক্ষায়ও রাখছে। এর পাশাপাশি রাস্তা পরিষ্কারও করছে তারা।’
কমলগঞ্জ আব্দুল গফুর চৌধুরী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মিতুল জানান বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে না। এতে সড়কে বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য আমরা স্ব উদ্যোগে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছি। সাধারণ পথচারী ও যানবাহন চালকরাও নিয়ম মেনে পথ চলছেন।’