দিরাই (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রায় ২ অতিবাহিত হওয়ার পরও সুনামগঞ্জের দিরাই থানায় বিধবা মুতিয়া বিবি (৮০) হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এ অভিযোগ জানান, দিরাই থানার জগদল ইউনিয়নের পুকিডহর গ্রামের মৃত আসাদ খান ও নিহত বিধবার পুত্র মোঃ ফরমান খান। নিহত মুতিয়া বিবির পুত্র ফরমান খান (৫৯) একই দিন প্রতিপক্ষের বন্দুকের গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হন। সেদিন ছিল সোমবার ২৯ জুলাই বিকেল ৩ ঘটিকা। ওইদিন পুকিডহর গ্রামে প্রতিপক্ষরা গ্রামের দুদিক থেকে ঘেরাও করে দা,লাঠি,রামদা,ছুলফিসহ দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুক দ্বারা গুলি করে ফরমান খানসহ তার পরিবারের মোট ২১ জনকে আহত করে। আহতদেরকে ঘটনার পরপরই দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৪ জনকে সিলেটস্থ এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরমান খানের বিধবা মাতা মুতিয়া বিবি (৮০) একইদিন রাত ১১টায় মারা যান। এ ঘটনায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার নায়নগর গ্রামের মৃত আব্দুল বারিকের পুত্র দুলাল মিয়া (৪১) এবং পুকিডহর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের পুত্র শেলাল আহমদ,গুল আহমদ ও আবদাল নূর,মৃত রছদ খানের পুত্র নজমুল খান ও সুয়েব খান,আব্দুল আওয়ালের পুত্র মনাফ,রুপ উদ্দিন,খোকন ও ছাইদ উল্লা,মৃত মাহমুদ খানের পুত্র কামাল খান,এলমান খানের পুত্র নুহান খান,ছমরু খানের পুত্র আনছার খান ও দরছত খান,নাজির খানের পুত্র রুপন খান ও ইছাক খান,মৃত শফিক উল্লার পুত্র সৈয়দ উল্লাহ,মুছন উল্লা ও শরিফ উল্লাহ এবং মৃত আমিন খানের পুত্র আবুবকর সায়েদ খান ও সালামত খানসহ মোট ৩৭ জনকে আসামী করে ফরমান খান দিরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪ (জিআর ১২০/২৪) তাং ১৬/০৮/২০২৪ইং। কিন্তু ঘটনার ২৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হত্যা মামলার কোন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়নি।
বাদী ফরমান খান বলেন, আমার চাচাতো ভাই সাবাজ খান আর ভাতিজা আলম খান ছাই দিয়ে হাওরে মাছ ধরতে গেলে প্রতিপক্ষরা নৌকাযোগে দলবেধে তাদের কাছে গিয়ে মাছ ধরতে নিষেধ করে। এতে মৌখিক বাদানুবাদের জের ধরে আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রভাবশালী ইউপি সদস্য দুলাল মিয়ার নির্দেশে তারা একতরফাভাবে আমাদের বসতবাড়ীর দুদিকে ঘেরাও করত: অতর্কিত হামলা চালায়। মায়ের খুনের ঘটনায় দুলাল মিয়াকে প্রধান আসামী করে মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে আমি দিরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু পুলিশ প্রধান আসামী দুলাল মিয়াকে বাধ দিয়ে গত ১৬ আগস্ট মামলাটি এফআইআর করেছে। জানা গেছে, পুকিডহর গ্রামের প্রবাসী আরজু খান ও হোসেন খানের মধ্যে জমিজমা ও আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। দু’পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলাও রয়েছে।
গত বছরের ২৫শে অক্টোবর দু’পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে আরজু খানের পক্ষের দুলাল মিয়া নামের এক যুবক খুন হন। দিরাই থানার ওসি মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন,বিদেশী টাকার গরমে পুকিডহর গ্রামের দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ আছে। তবে বৃদ্ধা মুতিয়া বিবি খুনের অভিযোগের বিষয়টি সঠিক বলেই আমরা তদন্ত জেনেছি এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করেছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দিরাই থানার এসআই মোঃ রাজু মিয়া বলেন,আমরা হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।