কুলাউড়ায় চা বাগানের অভ্যন্তরে জোরপূর্বক মাঠ দখলে মরিয়া খাসিয়ারা

31

কুলাউড়া প্রতিনিধি: কুলাউড়া উপজেলার রেহানা চা বাগানের হাজার খানেক চা গাছ উপড়ে ফেলে জোরপূর্বক রাস্তা ও খেলার মাঠ নির্মানের চেষ্টা করছে বাগানের অভ্যন্তরে বসবাসরত গারো ও খাসিয়ারা। বাগানের ফ্যাক্টরীর পাশ দিয়ে তাদের চলাচলের জন্য রাস্তা থাকলেও বাগানের সেকশনে যাওয়ার সরু রাস্তা(কন্ট্রোল পাত) জোরপূর্বক বড় করে অবাধে গাড়ীসহ চলাচল করতে উঠে পড়ে লেগেছে তারা।

চা বাগান কর্তৃপক্ষ আশংকা করে বলেছেন, ২০২৩ সালের মার্চে অনুরুপভাবে খাসিয়া ও গারোরা মিলে সরু রাস্তাকে বড় করতে গিয়ে শত শত চা গাছ নষ্ট করে। পরে সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে গিয়ে তাদেরকে পুরাতন রাস্তা ব্যবহার এবং সরু রাস্তাটি বাগানকে বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। এক বছর খাসিয়া ও গারো পরিবার প্রশাসনের সিদ্বান্ত মেনে চললেও মধ্যখানে রাতের আধারে ১৩ সেকশনে প্রায় হাজার খানেক চা গাছ উপড়িয়ে ফেলে সেখানে খেলার মাঠ নির্মান করে ফেলে এবং বর্তমানে ছোট রাস্তার উভয় পাশে শত শত চা গাছ নষ্ট করে রাস্তা প্রশস্থকরনের পায়তারা চালাচ্ছে । গারোদের চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট রাস্তা থাকলেও অজ্ঞাত কারনে নতুন করে সেকশনের চা গাছ নষ্ট করে নতুন একটি রাস্তা নির্মানের দাবী তুলে পরিস্থিতি নাজুক করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে বলে বাগান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেন।

রেহানা চা বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ৫শ একর জায়গায় চা চাষ করছেন তারা। এর মধ্যে বহু আগে পল খাসিয়াসহ ৩/৪ টি খাসিয়া ও গারো পরিবারকে বাগানের শ্রমিক হিসাবে নিয়োগ দেয়। তারা বাগানের অভ্যন্তরে ও বাগানের লিজকৃত জায়গায় বসবাস করে আসছে। প্রথমে ৩-৪ টি পরিবার থাকলেও ধীরে ধীরে সংখ্যা বেড়ে এখন ১৫ টি পরিবার গারো-খাসিয়া এবং ১ জন বাংঙ্গালীও ৩০-৪০ একর জায়গা জবর দখল করে ফেলেছে।

এব্যাপারে রেহানা বাগানের মধ্যে বসবাসরত খাসিয়া হেডম্যান জনপল জানান,বাগান কর্তৃপক্ষ যে রাস্তা দিয়ে আমাদেরকে চলাচলের সুযোগ দিয়েছে সেটি ফ্যাক্টরীর পাশ দিয়ে। আমরা চাই সেকশনের পাশ দিয়ে রাস্তা হলে আমাদের যাতায়াতের দূর্ভোগ লাঘব হবে।

রেহানা চা বাগানের ব্যবস্থাপক একে আজাদ বলেন,বাগানের জায়গায় অবৈধভাবে বসবাস করছে পল খাসিয়াসহ কয়েকটি গারো পরিবার। গত বছরও আমাদের পাতিয়াওলাদের ব্যবহারের সরু রাস্তাটি চা গাছ নষ্ট করে বড় করে ফেলে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাস্তাটি বন্ধ করি। এবং চা গাছ রোপন করি। এরপরেও তারা গোপনে গোপনে ১৩ নং সেকশনে প্রায় হাজার খানেক চা গাছ নষ্ট করে খেলার মাঠ করে ফেলেছে। আমাদের কমপক্ষে ৪-৫ লক্ষ টাকার লোকসান হয়েছে। তিনি বলেন, রাস্তা ওপেন হয়ে গেলে গাছ ও চা পাতা চুরি হওয়ার আশংকা থাকে। সরকারকে খাজনা,কর,লিজের টাকা পরিশোধ করে আমারা কোন রকম বাগান চালিয়ে যাচ্ছি। তার উপরে চা পাতা ও গাছ চুরি হয়ে গেলে আমাদের কি অবস্থা হবে ।

এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহি উদ্দিন জানান, আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।