আতঙ্কে অন্য গাড়ির মালিকরা: কুলাউড়ায় দেড়মাসে ৭ সিএনজি, ১ প্রাইভেট কার ও ৪ মোটর সাইকেল চুরি

41

কুলাউড়া প্রতিনিধি: কুলাউড়া থেকে গত দেড়মাসে ৭টি সিএনজি অটোরিকশা, ১টি প্রাইভেট কার ও ৪টি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরি হওয়া গাড়ির মালিকরা এবিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও এখনো কোন গাড়ি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। বিশেষ করে সিএনজি অটোরিকশা গাড়িগুলো যাদের চুরি হয়েছে তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র এই মাধ্যম হারিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে অসহায় ভাবে দিন যাপন করছেন তারা। হঠাৎ করে তাদের মালিকানাধীন এই গাড়িগুলো রহস্যজনকভাবে চুরি হওয়ায় কুলাউড়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে যাদের সিএনজি অটোরিকশা রাতের আধারে চোররা নিয়ে গেছে তাদের অনেকেরই শোরুম থেকে কিস্তিতে ক্রয় করা। গাড়িগুলো চুরি হওয়ার পর থেকে শোরুমের মাসিক কিস্তি বহন করাসহ পরিবার খরচ চালাতে অকেনেই হিমশিম খাচ্ছেন।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান মনিরের একটি স্টারলেট কার গাড়ি নং (সিলেট মেট্রো ক- ০২-০১৪২), ১২ আগষ্ট গভীর রাতে তার বাসা থেকে চুরি হয়। পরে ২৭ আগষ্ট একই রাতে উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার থেকে একসাথে তিনটি সিএনজি অটোরিকশা গাড়ি চুরি হয়। তাদের মধ্যে সাদিকুর রহমান তুয়েলের মালিকানাধীন সিএনজি নং (মৌলভীবাজার থ- ১২-৯২৫৪), সাইদুল ইসলাম লাকির সিএনজি (মৌলভীবাজার থ-১১-৬৫১৩) ও মোর্শেদ খান মালিকানাধীন সিএনজি নং (মৌলভীবাজার থ- ১১-৭৩০১)। এরপর ১ সেপ্টেম্বর একই রাতে ব্রাহ্মণবাজার হিংগাজিয়া এলাকার সাবেক মেম্বার শফিকুর রহমান কুদ্দুছের মালিকানাধীন সিএনজি গাড়ি নং (মৌলভীবাজার থ- ১২-৪৯৩৩) এবং টিলাগাঁও ইউনিয়নের ভেজাবন এলাকার মনির মিয়া মালিকানাধীন একটি নতুন (অনটেস্ট) সিএনজি গাড়ি গ্যারেজের তালা ভেঙ্গে চোররা নিয়ে যায়। এদিকে সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর একই রাতে আরো ২টি সিএনজি অটোরিকশা চুরির ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা এলাকার সাঈদ মিয়ার মালিকানাধীন সিএনজি গাড়ি নং (মৌলভীবাজার থ- ১২-৯৯০৯) ও হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই এলাকার মো. কালাম মিয়া মালিকানাধীন সিএনজি গাড়ির নং (মৌলভীবাজার থ- ১১-৭৩০৩) চোররা গ্যারেজের তালা ভেঙ্গে নিয়ে যায়। এদিকে গত দেড়মাসে কুলাউড়া শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিসহ চারজনের ৪টি মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। কুলাউড়ায় একের পর এক এসব গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটলেও এখনো কোন গাড়ি উদ্ধার না হওয়ায় আতংকে রয়েছেন সিএনজি অটোরিকশাসহ অন্যন্য গাড়ির মালিকরা। তাদের দাবি সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন দ্রুত গাড়ি চোরদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে, তা রোধ না করা হলে অনেক সিএনজি মালিককে পথে বসতে হবে।
হতদরিদ্র সিএনজি চালক সাঈদ জানান, অনেক কষ্টে ঋণ করে কিছু নগদ টাকা দিয়ে কিস্তিতে শোরুম থেকে একটি সিএনজি ক্রয় করে নিজে চালাতেন। এখনো বেশিরভাগ কিস্তির টাকা বাকী রয়েছে। কিন্তু তার গাড়িটি চুরি হওয়ায় বর্তমানে তাকে মানবেতর দিন যাপন করতে হচ্ছে। এক দিকে শোরুমের কিস্তির জন্য চাপ আর অন্যদিকে স্ত্রী সন্তানদের বরণ পোষণ করতে তার হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, আমি থানায় নতুন যোগদান করেছি মাত্র, নতুন করে পুলিশি সেবার কার্যক্রম চালুর চেষ্টা চলছে। এখন থেকে পুলিশ যেকোন অপরাধীদের ধরতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে এবং আর যাতে কোন গাড়ি চুরির ঘটনা না ঘটে সেক্ষেত্রে পুলিশ তৎপর থাকবে।