সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিক স্থাপনা

34
Exif_JPEG_420

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের ভূ-সম্পত্তি কৃষি বন্দোবস্ত নিয়ে গড়ে উঠেছে বাণিজ্যিক স্থাপনা নানা স্থাপনা। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এ সেকশনের কৃষিজমি বন্দোবস্ত নিয়ে গড়ে তুলেছেন বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এতে বেহাত হচ্ছে রেল সেকশনের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। শমশেরনগর ও ভানুগাছসহ বিভিন্ন ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকার কোটি টাকার মূল্যবান ভূ-সম্পত্তি কৃষি বন্দোবস্ত নিয়ে বাসাবাড়িসহ দোকান কৌঠা স্থাপন করে বিভিন্ন খন্ডাংশ করে লোকজনের কাছে বিক্রি ও ভাড়া দিয়েও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব জমি প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেলেও উদ্ধারে নেই কোন তৎপরতা কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিনে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী মহল কর্তৃক রেলওয়ের বন্দোবস্ত নেওয়া জমিজমার সাথে পরিত্যক্ত জমি নিজেদের দখলে নিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছেন। এসব জমি কিনে লোকজন স্থায়ীভাবে বসতঘর নির্মাণ করছেন। এছাড়াও প্রভাবশালীরা টিনসেড, পাকা ও আধা পাকা ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন । এসব ঘরে নিম্ম আয়ের লোকজন ভাড়া নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেট-আখাউড়া রেল সেকশনের জমি স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাওয়ায় সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। প্রভাবশালীদের কেউ কেউ এসব জমি কৃষি লিজ নিয়ে দালান-কৌটা নির্মাণ করছেন। আবার অন্য লোকদের কাছে বিক্রিও করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

ভাটেরা, কুলাউড়া, লংলা, শমশেরনগর, ভানুগাছ, শ্রীমঙ্গল, সাতগাও, রশিদপুর, লস্করপুর, শায়েস্তাগঞ্জ ও নোয়াপাড়াসহ বিভিন্ন ষ্টেশনের পাশের জমি অবৈধ দখলে নিয়ে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। রেলওয়ের কতিপয় কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে একটি মহল দখল কাজ সম্পন্ন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কৃষিজমির সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যিক স্থাপনায় রূপ নিয়েছে শমশেরনগর ও ভানুগাছ স্টেশন এলাকায়।

পাবই রেলক্রসিং এলাকার স্থানীয় এলাকার হারুনুর রসিদ, আব্দুর রহিমসহ এলাকাবাসী জানান, অবৈধভাবে নির্মিত দোকানের কারনে রেলক্রসিং-এ মারাত্বক দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। প্রভাবশালীদের অবৈধ দখলে রেলের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হওয়ায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিপুল পরিমাণের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে রেল লাইনের ক্লিপ, নাটবল্টুসহ মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যাওয়ায় এই সেকশনে রেল চলাচলে ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় ওই জোনের বিভিন্ন ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে নির্মিত দালান। বিভিন্ন ষ্টেশনে কর্মরত মাষ্টার ও প্রকৌশলী বিভাগের লোকজন ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে এভাবে টাকা উপার্জন করছেন। আবাসিক কোয়ার্টারে বাইরের লোকজন বসবাস করলেও সেখানে সরবরাহকৃত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল ও পরিশোধ করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। গণপূর্ত (রেল) (শ্রীমঙ্গল অঞ্চল)-এবং দু’জন স্টেশন মাস্টার জানান, ভূ-সম্পত্তি বিভাগ থেকে লিজ নিয়ে অবৈধভাবে কিছু কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, কৃষিজমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক স্থাপনা করার কোনো সুযোগ নেই। অভিযান চলমান আছে। তবে জনবল কম থাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এবিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তাকে অভিযান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন তারিখ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ আলোকে শমশেরনগর স্টেশন এলাকার আশপাশে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অভিযান পরিচালনার কথা রয়েছে।