জৈন্তাপুর প্রতিনিধি:: জৈন্তাপুর সরকারী হাসপাতলের সিনিয়র নার্স আমার স্ত্রী মরহুমা নুরজাহান’র পেনশনের টাকা হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন তার স্বামী এম এ আহাদ। গত ২৭ অক্টোবর-২০২৪ খ্রি: রোববার জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এই অভিযোগ করেন।
জৈন্তাপুর উপজেলার ২নং লক্ষীপুর গ্রামের ৪নং বাংলা বাজার এলাকার বাসিন্দা এম এ আহাদ তিনি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আমার স্ত্রী জৈন্তাপুর সরকারী হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মৃত নুরজাহান গত ১২/০২/২০২৪ খ্রি: তারিখে নিঃসন্তান অবস্থায় চাকুরীরত থাকাকালীন সময়ে ইন্তেকাল করেন। আমার স্ত্রীর ইন্তেকালের পর তার সরকারী চাকুরীর পেনশনের অর্থ কৌশলে জৈন্তাপুর হাসপাতালের অফিস সহকারী আলী আকবর ও সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সালাউদ্দিন মিয়া এবং বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুল ইসলামের যোগসূত্রে পেনশনের টাকা আত্মসাত চেষ্টা করছেন।
ইতিমধ্যে মৃত্যু জনিত ভাতা ৮ লাখ ২২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই টাকার একটি বড় অংশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, আমি ১৯৯২ খ্রি: ইসলামী শরিহা মোতাবেক নুরজাহান-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। বন্ধ্যাত্ব হওয়ার কারণে স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে আমি ২য় বিবাহ করি। বিবাহ করলেও নুরজাহান-এর স্বামী হিসাবে তার যাবতীয় ভরন পোষন সহ সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন এবং তার মৃত্যুর পর জানাজা সহ সকল কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করি।
পরবর্তী সময় জানতে পারলাম আমার শ্বাশুড়ী সাথে গোপনে জৈন্তাপুর সরকারী হাসপাতালের অফিস সহকারী সহ কতিপয় ব্যক্তিবর্গ আমাকে অবগত না করে আমার স্ত্রীর পেনশনের যাবতীয় টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন।
মৃত্যুর দিন তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ সহ হাসপাতালে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হাসপাতালের আবাসিক কোয়াটারে কিছু নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিল। আমার শ্যালক আলমাস ও আরিফের কাছে প্রদান করা হয়েছিল। আবাসন স্থলে অন্যান্য মালামাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট জিম্মায় ছিল। মালামাল সমুহ আমাকে অবগত না করে আমার শ্যালক আরিফ জৈন্তাপুর হাসপাতালের অফিস সহকারী আলী আকবর-এর সহযোগীতায় অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেন।
আমার স্ত্রীর পেনশনের টাকার সঠিক হিসাবের বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট কয়েক দফা যোগাযোগ করলে আমাকে সঠিক কোন তথ্য না দিয়ে আংশিক কিছু কাগজপত্র প্রদান করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিপূর্ণ টাকার হিসাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে তাদের উপর আমার সন্দেহ দেখা দেয়। আমার স্ত্রীর পেনশনের টাকা উত্তোলনে আমার শ্বাশুড়ীর সাথে তাদের অফিসের কয়েকজন ব্যক্তির ভাগ বাটোয়ারা একটি গোপন চুক্তি করা হয়েছে।
আমার স্ত্রীর পেনশনের টাকার হিসাবের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জৈন্তাপুর, সিলেট মহোদয়কে অবগত করি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট পেনশনের সমস্ত তথ্য চেয়ে উকিল নোটিশ প্রেরণ করা হয়। টাকার পরিমানের সঠিক তথ্য না দিয়ে আমাদের মধ্যে ডিভোর্স হওয়ার মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বানোয়াট ডির্ভোস লেটারের কথা বলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হয়। আমাকে স্ত্রীর প্রকৃত হক থেকে বঞ্চিত করে কৌশলে আমার স্ত্রীর পেনশনের টাকা আত্মসাতের চেষ্টায় লিপ্ত জৈন্তাপুর সরকারি হাসপাতালের অফিস সহকারী আলী আকবর ও বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুল ইসলাম। আমার সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ ও মিথ্যা হয়রানি মুলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমি সিলেটের সিভিল সার্জন সহ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিকট দাবী করছি।
আমার স্ত্রীর মৃত্যুজনিত কারণে সে নিঃ সন্তান থাকায় আমার প্রকৃত হক সঠিক ভাবে বন্টন করে পেনশনের পরিপূর্ণ হিসাব প্রদান এবং তদন্ত পূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান করছি।
এসময় আলহাজ্ব হোসাইন আহমদ, ইউসুফ মেম্বার, এরশাদ আলী সহ গন্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্তিত ছিলেন।