দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা শুরু

1

অনলাইন ডেস্ক: পরিবারের সঙ্গে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে সদরঘাট থেকে লঞ্চযোগে চাঁদপুরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। আধাঘণ্টা-একঘণ্টা পর পর যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে লঞ্চ। তবে এ বছর ব্যবসায়ী ছাড়া অন্যান্য পেশার লোকজন আগেই ছুটি পেয়েছেন। ফলে লঞ্চে ভিড়ও রয়েছে।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ঘুরে দেখা গেছে- ঢাকা থেকে চাঁদপুরগামী লঞ্চের সংখ্যাই বেশি। আবার সিডিউলের লঞ্চগুলোও চাঁদপুর থেকে সদরঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।

সদরঘাট থেকে ছেড়ে সকাল সাড়ে ১০টায় চাঁদপুর ঘাটে আসে এমভি সোনারতরী-১। এই লঞ্চের যাত্রী ছিল সহস্রাধিক। এর আধঘণ্টা পর ১১টায় লঞ্চঘাটে ভিড়ে এমভি অগ্রদূত। এই লঞ্চটিতে প্রচুর যাত্রী ছিল। লঞ্চটি ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে চাঁদপুর হয়ে শরীয়তপুর ঈদগা ফেরিঘাটে গিয়ে যাত্রী নামায়।

বেলা ১১টায় ঘাটে আসে বিলাসবহুল লঞ্চ এমভি বোগদাদিয়া-৭। এই লঞ্চটিও অনেক যাত্রী নিয়ে চাঁদপুর ঘাটে ভিড়ে।

ফরিদগঞ্জ রূপসা এলাকায় বাড়ি অগ্রদূত লঞ্চযাত্রী হিমেল জানান, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি এসেছি। যদিও লঞ্চে যাত্রী বেশি থাকাতে কষ্ট হয়েছে, তবে ঈদ আনন্দের কাছে তা কিছুই নয়। কারণ লঞ্চের চাইতে সড়ক পথে ভ্রমণ আরও বেশি কষ্টের।

ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন রিয়াজ। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা। সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে লঞ্চযোগে চাঁদপুর ঘাটে নেমেছেন। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আরও দুইদিন অফিস খোলা ছিল। মা-বাবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ছুটি নিয়ে আগেই আসলাম। সন্তানরাও দাদা-দাদীর সান্নিধ্য পাবে।
স্বামীর চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন খাদিজা বেগম। তিন সন্তানকে নিয়ে লঞ্চে করে চাঁদপুরে এসেছেন। তিনি বলেন, আমার শ্বশুর-শাশুরি নেই। তবে শ্বশুর পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে ঈদ করার জন্য বাড়িতে এসেছি। ঈদ আসলেই সন্তানরা বাড়ির অপেক্ষায় থাকে। বাড়িতে ঈদ উদযাপন করলে আমাদের চাইতে শিশুরা বেশি আনন্দ পায়।
শিশু কামরুল হাসান থাকে ঢাকায়। বাড়ি চাঁদপুর সদের। বাবার সঙ্গে পুরো পরিবার সদস্যরা লঞ্চযোগে চাঁদপুরে এসেছেন। কামরুল জানায়, বাবা-মার সঙ্গে লঞ্চে চাঁদপুরে আসার উদ্দেশ্যে হচ্ছে দাদা-দাদীর সঙ্গে ঈদ করা। কারণ বাড়িতে না আসলে ঈদের আনন্দ বুঝা যায় না। ঈদে অনেক মজা করবো।
ঘাটের লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি আলী আজগর সরকার বলেন, যাত্রীদের নিরাপদে পৌঁছাতে সার্বিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে লঞ্চগুলো ঘাটে ভিড়লে যাত্রীদের সু-শৃঙ্খলভাবে নামতে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদী পথে নিরাপত্তার জন্য নৌ পুলিশ সদস্যরা টহলে রয়েছে। ঘাটে নিরাপদ ব্যবস্থা নিশ্চিতে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। ঘাটে আটটি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। যাত্রীরা যাতে নিরাপদে বাড়ি যেতে পারেন সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি আছে এবং নৌ পুলিশ কাজ করছে।