ঈদের ছুটিতে সাদাপাথরে পর্যটকদের উপচেপড়া ঢল –

5

মোঃ আব্দুল আলীম, কোম্পানীগঞ্জ (সিলেট): মনোমুগ্ধকর ও প্রবল চিত্তাকর্ষক সিলেটের সাদাপাথর। এই সাদাপাথরের শীতল পরশ পেতে দলে দলে আগমন ঘটে পর্যটকদের। ঈদসহ বিভিন্ন জাতীয় ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামে সিলেটের এই পাথর রাজ্যে।

এবারের মহা উৎসব আনন্দঘন ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষে এর ব্যতিক্রম হয়নি।সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জের নজরকাড়া ভোলাগঞ্জ পর্যটন স্পট সাদাপাথরে দেশের বিভন্ন স্থান থেকে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার পর্যটক আবাল- বৃদ্ধ ও বণিতা।

সারি সারি গাড়ি ও নৌযান নিয়ে এসে জড়ো হচ্ছেন সাদাপাথর স্পটে। মহানন্দ ও হৃদ্বিক বিলাসে কাটাচ্ছেন দৈনন্দিন জীবনের কিছু সময়।

ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটির শেষ ও দ্বিতীয় দিন শনিবার। এই দিনে পর্যটকদের বাঁধভাঙ্গা ঢল নেমেছে সাদা পাথর রাজ্যে।

সিলেট শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীর উজানে এই সাদাপথর রাজ্য। সাদাপাথর ও ধলাই নদীর শীতল নীরের স্পর্শ যেনো এক নৈসর্গিক আবহের হাতছানি। এই আবহ ও নীরে নিজেদেরকে সপিয়ে নিতে মতেয়ারা মানুষজন।
ছুটে আসেন সারাবছর ধরে।
সিলেটের সাদাপাথর নামীয় এই নৈসর্গিক রাজ্যের একদিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সূরম্য পর্বতমালা, অন্যদিকে বাংলাদেশের পল্লীঘেরা সবুজশ্যামল পরিবেশ। এর মাঝখান দিয়ে মেঘালয় পর্বত থেকে প্রবাহিত ধলাই নদী। নদীর উজানে দুই পাড়ে প্রাকৃতিকভাবে বর্ণিল সাজে সাজিয়ে রাখা সারি সারি সাদাপাথর। উপরের নীল আকাশ,উজানের সবুজ পর্বতমালা ও নিচের সাদাপথর বরাবরই মুগ্ধ করে ও মতিয়ে তুলে ভ্রমনপিপাসু পর্যটকদের।
সাদাপাথর দেখতে আসা নারায়ণগঞ্জের সোমা আক্তার তার হৃদ্বিক অনুভুতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন-এই পরিবেশ ও এই প্রতিবেশ নয়নাভিরাম এবং অপরূপ। এই শীতল পরিবেশ যেকোনো মানুষের মনকে ক্ষণিকে পরিবর্তন করে দিতে পারে,নিমিষেই দুর করে দিতে জীবনের সকল ক্লেশ ও জ্বালাতন।
নেত্রকোনা থেকে স্বপরিবারে বেড়াতে আসা গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার তানহা জানান, সাদা শ্যামল ও নীল-সবুজের এই পাথুরে শীতল পরিবেশে আমি যেনো নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি। মন চাচ্ছে না ফিরে যেতে। কিন্তু তারপর ফিরতে হচ্ছে নিজ নীড়ে।
মৌলভীবাজারে কুলাউড়া থেকে আসা শামীম আহমেদ বলেন, সাদাপাথর ও ধলাই নদীর শীতল পরশ মনকে আরো শীতল করে দিয়েছে। সত্যিই এটা এক অসাধারণ পর্যটন স্পট। একবার এসে ফিরে যওয়ার পর বারবার মন চাইবে আবার চলে আসতে।
ঈদে সাদাপাথরে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে প্রচুর ট্যুরিস্ট পুলিশ। সিলেট রিজিওনের পুলিশ ইন্সপেক্টর আখতার হোসেন বলেন,পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও তৎপর রয়েছে। কয়েকটি টিমে বিভক্ত হয়ে আমাদের পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে। পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দে ঘুরাফেরা করতে কোনো অসুবিধা ও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছ না বলেও জানান তিনি ।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুনজিৎ কুমার চন্দ জানান, সাদা পাথর পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসা পর্যটকের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সঠিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ আগন্তুক পর্যটকদের কাছে থেকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।