হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারবে বাংলাদেশ?

1
শেষ ম্যাচের আগে অনুশীলনে বাংলাদেশ দল।

ক্রীড়া ডেস্ক: ব্যাপারটা বাংলাদেশ দলের জন্য লজ্জাজনকই। পুঁচকে দলের বিপক্ষে যেখানে শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর কথা, সেখানে বাংলাদেশই এখন সিরিজ হেরে তীব্র সমালোচনায় ক্ষত-বিক্ষত। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে আজ শনিবার মান বাঁচানোর মিশনে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। স্বাগতিকদের কাছ থেকে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে আজ লাল-সবুজ জার্সিধারীদের জিততেই হবে। হিউস্টনে শনিবার রাত ৯টায় শুরু হবে ম্যাচটি। যা সরাসরি সম্প্রচার করবে নাগরিক টেলিভিশন।

চলতি সিরিজ দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথমবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। যার আড়ালে মূল লক্ষ্যই ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া। কিন্তু বিশ্বকাপের অন্যতম আয়োজক দেশটিতে প্রস্তুতিতো দূরে থাক, উল্টো আত্মবিশ্বাসের জায়গাতেই ফাটল ধরেছে টাইগারদের। প্রথম ম্যাচ পাঁচ উইকেটে এবং পরেরটিতে ছয় রানে হেরে এখন হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কায় তারা। হোয়াইটওয়াশ হওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচতে শনিবার রাতের ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। জিততে পারলে কেবল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোই হবে না, বিশ্বকাপের আগে হারানো আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও ফিরিয়া আনা সম্ভব হবে।

অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না! দুই দলের ক্রিকেটীয় ঐতিহ্যের মধ্যে যোজন যোজন দূরুত্ব। তাই পারফরম্যান্সে অনেকখানি এগিয়ে থাকার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ২২ গজে তাদের মনে হয়েছে ‘পুঁচকে’ কোন ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র আধিপত্য দেখিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বোলিং আক্রমণের সামনে শান্ত-লিটন-সাকিবরা দাঁড়াতেই পারেনি। যদিও অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান অজুহাত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধার অভাবকে দায়ী করেছেন!

প্রস্তুতির ঘাটতি ও যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ-সুবিধার অভাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘এটাকে যদি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজ ধরি, তাহলে অনুশীলন সুবিধাটা আরও বেশি হওয়ার দরকার ছিল। একদিন ঠিকঠাক নেট সেশন হয়েছে। তাও ব্যাটাররা যতটুকু ব্যাটিং করা দরকার সেটা করতে পারেনি। এটা আদর্শ অনুশীলন বলা যায় না। এক দিন ছিল ঐচ্ছিক (অনুশীলন), সেখানে ব্যাটাররা সুযোগ পায়নি (প্রথম ম্যাচের পরদিন)।’
সাকিব সুযোগ-সুবিধার অভাবের কথা বললেও নিজেদের ব্যর্থতার কথাগুলো সেভাবে বলেননি। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালে খুব বেশি অনুশীলন করতে দেখা যায়নি বাংলাদেশ দলকে। প্রথম ম্যাচ হারের পরদিন টেক্সাসের হিউস্টনে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা পরিদর্শনে গিয়েছিল দলের একাংশ। সিরিজ হারের পর বাংলাদেশের পুরো দল অনুশীলনে অংশ নেয়নি। ঐচ্ছিক অনুশীলনের নামে অল্প কিছু সংখ্যক ক্রিকেটার অনুশীলন করেছেন। এতে প্রতিপক্ষ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্ব না দেওয়ার প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।

অধিনায়ক শান্ত অবশ্য হারের কারণ হিসেবে নিজেদের মানসিকতাতেই সামনে এনেছেন, ‘আমার মনে হয়, স্কিলে কোনও সমস্যা নেই। মানসিকতা ও মনোবৃত্তি বদলাতে হবে আমাদের। গত দুই ম্যাচে আমরা তা করতে পারি ও ভালো খেলতে পারিনি। আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক। মাঝের ওভারগুলোয় আমরা প্রায় প্রতি ওভারেই উইকেট হারিয়েছি। ম্যাচ হারার মূল কারণ এটিই।’

শনিবার রাতে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে একাধিক পরিবর্তন আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। একাদশে ফিরতে পারেন আফিফ হোসেন। আরও একবার জায়গা হারাতে পারেন সৌম্য সরকার। সিরিজে প্রথমবার খেলার সুযোগ হতে পারে স্পিনার তানভীর ইসলামের।

একাদশে পরিবর্তন হোক বা না হোক। আজ রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষায় বসতে হবে বাংলাদেশকে। সিরিজ জেতা যুক্তরাষ্ট্র যে কোনও মূল্যেই বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিতে মরিয়া হয়ে থাকবে। ফলে আগের দুই ম্যাচের চেয়ে আরও বেশি চাপে থাকবে বাংলাদেশ। এমনিতেই তীব্র সমালোচনায় বিধ্বস্ত বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম। এখন দেখার অপেক্ষা, শান্তরা স্নায়ু পরীক্ষায় উতরে যেতে পারেন কিনা।